গল্প - পুরোনা প্রাপ্তি
লেখা - Raihan Bin Bk
-হ্যলো রিয়া।
- হ্যা বলো।
- কোথায় তুমি??
- আমি তো কলেজ এ।
- কলেজ এ কেনো। তুমি আর আমি এক সাথে কলেজ এ যাওয়ার কথা ছিলো।
- ও হে, মনে ছিলো না।
- মানে কি??
- কি আবার!!
- আমার সাথে কলেজ এ যাবা এটাও আজকাল ভুলে যাও।
- দূর কথা বাড়াইও না.. ক্লাস শুরু হবে. কলেজ এ আসো তারাতারি।
- হুম আসতেছি।
- ফোন রাখলাম।
- আচ্ছ।।
রিয়ার সাথে কথা বলে কলেজ এর দিকে রওনা হলাম।
কালকে রাত এ ওর সাথে কথা বল্লাম, যে আমরা এক সাথে কলেজ যাবো. কিন্তু এই কথা ও সকাল এ ভুলে গেলো ।
এ কথা তো ওর ভুলার কথা না.. নাকি ও ইচ্ছে করেই এমন করছে।
যাই হোক কলেজের দিকে রওনা দিলাম
কলেজে ডুকতেই দেখলাম রিয়া অন্য ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলতেছে....
ছেলেদের সাথে কথা বলা... এখন ওর প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে..
না এটার একটা ফয়সালা করা দরকার.. ও আমার Gf ও সব কিছু ওর ইচ্ছা মত করতে পারে না।
ক্লাসের শেষে ওর হাতটা টেনে কম্পাসের পিছনে নিয়ে গেলাম।
রিয়া - আরে এইভাবে হাত টানতেছো কেনো?
আমি - এই সমস্যা কোথায় তোমার?
রিয়া- আমার কোনো সমস্যা নাই
আমি - তো ছেলেদের সাথে কি এইসব।
রিয়া - ছেলেদের সাথে এইসব কি মানে... ওরা আমার ফ্রেন্ড এবং ভালো ছাএ.... তোমার মত এমন লাস্ট বেন্সের ছাএ না।
বলেই চলে গেলো....
সকাল সকাল মন খারাব করে দিলো... এখন কলেজে থাকলে ওর সাথে ঝগড়া হবে তাই.. কলেজের বাহিরে টং দোকানে বসে সিগারেট ধরালাম.. তেমন খাই না মন মেজাজ খারাব থাকলে খাই এ আরকি .
.
রিয়া তখন কিসের জন্য জানি দোকানটাতে আসলো.. এসে দেখে আমি সিগারেট খাচ্ছি.
কিন্তু ও আমাকে কিছু বল্লো না.. যে মেয়ে সিগারেট দেখলে কিল ঘুসি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দিত সেই মেয়ে কিছু বলছে না...
কিছু বলার আগেই রিয়া ওর কাজ শেষ করে.. চলে গেলো. আমি পিছন থেকে শুধু ওর চলে যাওয়াটা দেখলাম..
আরো কয়েকটা সিগারেট ধরালাম... কেন জানি খুব খারাব লাগতেছে... ইচ্ছে করতেছে সিগারেটর আগুন দিয়ে টোঠ টা পুড়িয়ে ফেলি ..
মাথাটা জিম জিম করতেছে. চোখে যাপসা দেখতে শুরু করলাম... একটা রিকশ ওঠে বাসায় চলে আসলাম....
বাসায় আসার পর আম্মুর হাজার টা প্রশ্ন.. এখন কেনো আসলাম.. কলেজ এ গেলাম না কেন.. আরো অদ্ভুত কথা শুনালো... আমি কিছুই বলতে পারলাম না মুখ দিয়ে কোনো কথা আচ্ছে না..
রুমে গিয়ে .. বালিসে মাথা রেখে চোখ বুঝলাম.. .. যেনো চোখ বুঝলেই সব ক্লান্তি চলে যাবে...
একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম..
ঘুম ভাঙ্গলো আছরের নামজ এর পর.. চোখ মেলে দেখি ২-৩ টা কম্বল আমার শরিরে.. মাথায় জ্বরের পট্টি লাগানো...
অনুভব করলাম কম্বলের ভিতরে সব জেনো পড়ে যাচ্ছে..
বুঝতে পারলাম আমর খুব জ্বর এসেছে ...
আম্মুকে ডাক দিলাম.. আম্মু আসলো. হাতে খাবার নিয়ে .. খুব আদর করে খাইয়ে দিলো .. মুখে একদম রুচি নেই.. আম্মু অনেকটা ছোট বেলার মত জোর করে খাওয়ালো ..
খাওয়া শেষে বিছানা থেকে ওঠে নিচে নামতে যাবো তখনই মাথা ঘুরিয়ে পরে গেলাম। আম্মু আমাকে ধরে বিছানায় শুয়ালো..
রিয়ার কথা মনে পড়লো .. তারাতারি ফোন চেক করলাম. ও অনেক মেসেজ দিছে এতখনে.. কই একটা মেসেজ ও করেনি .. ফোন ও দেয়নেই...
না চাইতেও চোখের কয়েক ফোটা জ্বল গড়িয়ে পড়লো
.
. আমি অসুস্থ ৩ দিন হয়ে গেলো.
৩ দিন এ রিয়া একবার ও ফোন দেয় নাই কোনো মেসেজ ও দেয় নাই।
মরে আছি নাকি বেচেঁ আছি কি করছি ...
পরের দিন জ্বর নিয়ে কলেজ গেলাম বন্ধুদের সাথে দেখা করে ক্লাস এ ডুকলাম।
রিয়াকে দেখলাম সামনের বেন্সে বসে আছে.. ভালো ছাএী বলে কথা.....
ক্লাস শেষে রিয়ার সাথে কথা বল্লাম
আমি - ৩ দিন হলো আমি কলেজে এ আসি না.... আমি কেমন আছি.. কেনো কলেজে এ আসি না কোনো খোজ নিছো
রিয়া - ... তোমার আর খোজ খবর কি নিবো..৷ সারাদিন গেমস খেলছো আর ঘুমাইছো.৷... এইসব ছারা অন্যকিছু করতে পারো নাকি...?
আমি - তোমার এমনটাই মনে হইছে আমি এইসব করছি
রিয়া - হে
আমি - আচ্ছা কি সমস্যা বলো
রিয়া - ভালো লাগে না
আমি - কি..
রিয়া - এই রিলেশন টা
আমি - কেনো
রিয়া - জানি না
আমি - বলো
রিয়া - আমি ব্রেকআপ চাই... তুমার সাথে রিলেশনশিপ রাখবো না..
আমি - মানে কি বলতেছো এইসব
রিয়া - যা শুনছো তাই...
আমি - মাথা ঠিক আছে
রিয়া - হে এখন ঠিক আছে.. এতদিন ছিলো না
আমি - মানে
রিয়া - এত মানে মানে করবা না
আমি - আমার কি দেষ বলো
তুমার মত থার্ট ক্লাস ছাএের সাথে আমি রিলেশন করবো না .৷ কলেজের অনেক ভালো ভালো ছাএ ছেলেরা আমাকে প্রোফজ করে ।
তুমি কি করবা ফিউচার এ.... তুমার কোনো ভবিষ্যৎ আছে..৷ কি দেখে তুমার সাথে রিলেশন করবো....
আমি - তো কি হইছে..
রিয়া - আমাকে একা থাকতে দেও।
আমি - কেনো আমি কেমন তা দেখে রিলেশন করো নাই
রিয়া - হে, এখন করবো না আর ব্যাস. আর কোনো কথা বলতে চাই না এই বিষয় নিয়ে
আমি - ও আমি তো খারাব ছাএ.. না ঠিক এই বলছো আমার কোনো ভবিষ্যৎ নাই।
অন্য কারো সাথে রিলেশন করে সুখে থাকো।
রিয়া - ভালো ছাএ হতে পারলে আইসো আবার। তা না হলে আসা লাগবে না
আমি - পড়ালেখা করবো না আর
রিয়া - ওকে আল্লাহ হাফেজ।
আমি - আমি থাকবো না তার জন্য খুব মজা পাচ্ছো...
রিয়া- অবশ্যই। তোমার মত bf থাকার থেকে না থাকা অনেক ভালো
আমি - আমার মত
রিয়া - হে.. ঠিক তোমার মত
আমার মাথাটা একদম গরম হয়ে গেলো.. এমনেই অসুস্থ তার অপর রিয়ার কথার এই অবস্থা...
এক দৌড় এ ক্লাসের দরজা. জানালা বন্ধ করলাম।
রিয়া - এ কি করতেছো এইসব
আমি - একটু পড়েই বুজবি দারা
রিয়া - দরজা খুলো আমি বেড় হবো
আমি - আরে দাড়া না.. পাগল হচ্ছিস কেনো
তখন আমি ঠাস করে ওর মুখ চেপে ধরি ... ওর চোখ আমার চোখের দিকে .. আর মুখ থেকে গোঙ্গানির শব্দ।
ওর চোখে ভালো করে তাকালাম.. কি সুন্দর চোখ... কি মায়া.. কিন্তু আমার সাথে এমন করলি কেন. ভালোইতো বেসেছিলাম।
ওর কষ্ট হচ্ছে দেখে ছেড়ে দিলাম।
রিয়া - যতটুকু মন এ ছিলা .. তাও নষ্ট করে ফেল্লা
আমি - তুৃৃমি ভালো করেই জানো. তুমার সাথে আমি কখনো খারাব কাজ করবো না
রিয়া - হে তা তো দেখাইলা এখন
আমি - যাইহোক আমাদের মাঝে আর সম্পর্ক নেই..
রিয়া - হে
আমি - যাও তুমি আগে ক্লাস থেকে বেড় হও.. আমি পরে বেড় হচ্ছি..
রিয়া - ওকে..
রিয়া চলে গেলো.. আমি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়া.. কাদঁতে লাগলাম..
পর্ব:০১
গল্প - পুরোনো পাপ্তি
পর্ব -০২
লেখা: Raihan Bin Ak
রিয়া চলে গেলো.. আমি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে কাদঁতে লাগলাম।
আর ভাবতে লাগলাম।
এটা কি সত্যি আমার রিয়া। যে মেয়ে আমার মন খারাব হলে হাজার বাহানায় মন ভালো করে দিত..! সে এখন এভাবে কাদাঁছে আমাকে।
ক্লাস রুম থেকে দেখতে পেলাম রিয়াকে।
মুখে কত হাসি। আমাকে কাদিঁয়ে ও এখন খুব মজাতে আছে। এটা কেমন ভালোবাসা ছিলো। ও কি সত্যি ভালোবেসেছিলো আমাকে।
চোখ মুছে ব্যাগটা কাধে নিয়ে ক্লাস থেকে বেড় হলাম... রিয়াদের পাশ কাটিয়ে যেতে লাগলাম তখন একটা ছেলে বল্লো।
- রিয়া ভালোই করেসিছ এটার সাথে ব্রেকআপ করে.. !! ওই কোনো ভাবে তোর যগ্য না
- হ্যা রে জানি আমি
- হুম
মাথাটা গরম হয়ে গেলো...!! ছেলেটাকে কষিয়ে ২ টা চর মারলাম...
আমি - বেশি কথা বল্লে এখানেই শুইয়ে দিয়ে চলে যাবো। আমার ব্যাপারে তোর কথা বলা লাগবে।
রিয়া - এই তুমি ওরে মারলে কেন
রিয়ার এই কথা শুনে রিয়াকে একটা থাপ্পর মারলাম
আর বল্লাম
তুই কে আবার কথা বলস... চুপ একদম চুপ।
বলে কলেজ থেকে বেড় হয়ে আসলাম
দিন টা অনেক কষ্টে পার হয়। রাতে না খেয়ে ঘুমাতে গেলাম। ঘুম তো আসে না
রাত দুটোর দিকে।হালকা চোখ লাগে....
সকালে
কিরে ওঠ কয়টা বাজে
কেন
কেন কি কলেজ এ যাবি না
না যাবো না
কেন
এমনি
শরীর খরাব
না
তাহলে
প্লিয আম্মু যাও তো একটু ঘুমাতে দেও।
আম্মু যাওয়ার পর আরো কতোখন বিছানায় পরে রইলাম।
রিয়া আমার সাথে এমন করার কারন কি....!!!
আমি খারাব ছাএ। আমি লেখাপড়া দিয়ে কিছু করতে পারবো না। এসবই তো
ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে দেখালম ইয়ার চেন্জ পরিক্ষার এখনো ৪ মাস বাকি।
এই ৪ মাসে যা করার করতে হবে।
ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেস হয়ে খাবার খেলাম। বাড়ির পাশে একটা কোচিং সেন্টার আছে ওখানকার এক বড় ভাইকে ফোন দিলাম।
- হ্যালো ভাই। আমি আদি বলছিলাম
- হে ভাইয়া বলো
- ভাইয়া আমি আপনাদের কোচিং সেন্টারে পড়তে চাচ্ছি
- তুমি পড়বা।
- হ্য ভাই
- বিকালে আসো। বিকালে একটা ইন্টারের ব্যাচ আছে ওদের সাথে পড়বা।
- আচ্ছা রাখি ভাই। বিকাল এ দেখা হবে
- আচ্ছা
পড়ার টেবিল থেকে সব বই খাটে আনলাম।
এ বইের জন্য আমার আজ এই দশা।
ভাগ করে নিলাম কোন দিন কি পড়বো।
আর আমি ততটাও খারাব ছাএ না যতটা রিয়া ভাবে.. আমি ভালো ছাএই কিন্তু খাম খেয়ালিটা
বেশি করে ফেলি। গুরুত্ব কম দেই।
তার পর সরাদিন পড়তে শুরু করলাম। ফোন থেকে ফ্রি- ফায়ার + ফেবু সব ডিলেট। ফোন ধরি না। বন্ধুদের সাথে দেখা করা বন্ধ করে দিলাম
সকাল ভোর এ পড়তে বসি গভীর রাত এ ঘুমাই-
সকাল হয় কখন রাত হয় টের পাই না।
কলেজ এ খুব কম যাই। যাতে রিয়া বুঝে আমার পড়া লেখা আগের মতই আছে... আর কলেজে যেয়েই বা কি করবো... রিয়া যে সব কাজ করে নিজে ঠিক রাখতে পারবো না ।
আমার সাথে কথা পর্যন্ত বলে না... .. আমার সাথে এমন করে যেনো কোনো দিন দেখেইনি আমাকে।
আমি ও নিজের এডিটিওট নিয়ে থাকি কারো সাথে কথা বলি না।
নিজেকে নতুন ভাবে সবার কাছে পরিচয় দিতে হবে যাতে কেউ বাজে ছাএ বলতে না পারে।
এভাবে কেটে গেলো কিছুদিন।
রিয়া আর আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। আমি অবশ্য রিয়ার মেসেজ ফোনের আশায় থাকতাম।
একটাবার আমার খোজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না।
আজকে শেষ ক্লাস । স্যার মেডাম যার যার মত করে সাজেশন দিয়ে গেলো।
ক্লাস থেকে বের হয়ে হাটতে লাগলাম গেটের দিকে তখন রিয়াকে দেখলাম।
ও কলেজে না সেজে আসলেও খুব পরিপাটি থাকতো। আমি বল্লতাম সেজে আসবা ও বলত না ছেলেরা তাকিয়ে থাকবে আমি তখন ওর গালটা একটু টেনে দিতাম।
আর এখন সম্পর্ক কত দূরে। খুব ইচ্ছে করছে ওর পাশে যেয়ে বসতে ওর গাল টা আলতো ছুয়ে দিতে।
চোখের জ্বলটা হাত দিয়ে মুছে কলেজ থেকে বের হলাম তারপর বাসায় চলে আসলাম
বাসায় এসে লান্স করে লম্বা একক্টা ঘুম দিলাম।
ঘুম থেকে ওঠে পড়তে বসলাম।
এভাবে ৭ টা দিন কেটে গেলো
সকালে কলোজ এ গেলাম আজ থেকে পরিক্ষা শুরু।
হলে যেয়ে দেখি রিয়া আমার সমানের ছিটে। ২ জন এল সাথে ভর্তি হয়েছিলাম তাই এখন এক সাথে সিট পরা
রিয়াকে কিছু বল্লাম না চুপ চাপ নিজের ছিটে বসে রাইলাম
৩ মিনিট পর স্যার আসলো। খাতা প্রশ্ন দিলো।
প্রশ্ন হাতে পেয়ে আমি খুবই খুশি কারন সব আমার কমন এসেছে। কিন্তু এটা রিয়া কে বুঝতে দেওয়া যাবে না। ১০ মিনিট কিছু লিখলাম না।
রিয়া এ নিয়ে ২ বার ঘার নেড়ে দেখেছে আমি কি করি কিন্তু আমি তেমন পাত্তা দেইনি। ১০ মিনিট পর লেখা শুরু করলাম
লিখতে হঠাৎ খরে মেডাম এসে বল্ল এই ছেলে মাথার চুল এত বড় কেনো চুল কেটে আসতে পারো না
আমি তখন মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম চুল তো সত্যি অনেক বড় হয়ে গেছে।
এ কথা শুনার পর হলের সবাই হাসা শুরু করলো
আমি কিছু বল্লাম না চুপ চাপ লিখতে লাগলাম
পরিক্ষা শেষ হলো লাইফ এ প্রথম বার পরিক্ষা দিয়ে এত ভালো লাগলো।
কারো সাথে কথা বল্লাম না বাসায় চলে আসলাম।
ধীরে ধীরে সব গুলো পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলো।
পরিক্ষা গুলো অনেক ভালো হয়েছে। ভালো রেজাল্ট করবো ইনশাল্লাহ ।
শেষ পরিক্ষার দিন হল থেকে বের হতেই রিয়ার ডাক
আদি
কে
আমি
আমি কে
রিয়া
হে বলেন
কেমন আছো
ভলো
ও
হে
আর কিছু
পরিক্ষা কেমন হলো
৩ টা পাশ করবো আর বাকি গুলো ফেল।
সত্যি খারাব হইছে
হে
জানি না কেন এইসব বলার পর রিয়া আমাকে কষিয়ে একটা থাপ্পর মারলো
আমি কিছ বলতে যাবো তার আগেই তেরে হল থেকে বেড়িয়ে গেলো
আমি গালে হাত দিয়ে বসে পড়লাম
ও আমাকে মারলো কেন
তারাতারি করে বেড় হলাম রিয়া কে ডাক দিলাম
- এ রিয়া
- কি
- মারলা কেন আমাকে
- ইচ্ছে হইছে
- ও আচ্ছা ওইদিন যে তোমাকে আর তোমার
বি এফ কে মারছিলাম তাই আজকে আমাকে মারলা।
- হ্যা একদম তাই
- ওকে গুড বায়
- বায়
রিয়া চলে গেলো আমি শুধু ওর চলে যাওয়াটা দেখলাম।
হাটতে হাটতে বাসায় চলে এলাম
আম্মু - কিরে পরিক্ষা কেমন দিলি
আমি - ভালো।
আম্মু - যাক ভালো। কিন্তু বুজলাম না তুই এত ভালো করে পড়লি কেন
আমি - একটা কথা শুনো নাই... প্রতিটি ছেলের জীবনে উন্নতি ও অবনতির জন্য একজন মেয়ে থাকে.. আমারাও ওই রকম হয়েছে
আম্মু - তরে আবার কোন মেয়ে কি করলো
আমি - কিছু না.. খাবার বারো খুদা লাগছে
আম্মু - যা ফ্রেশ হয়ে আয়। আর শোন তর ছোট খালা ফোন দিছে। বল্লো তর পরিক্ষা শেষ হলে যেনো তুই ওখানে বেড়াতে যাস
আমি - আচ্ছা। কালকে সকালে রওনা দিবো। আমি একা যাবে নাকি তুমি ও সাথে যাবে
আম্মু - না। তুই যা একা। আমি গেলে বাসা ফাকা হয়ে যাবে
আমি - ওকে।
তারপরের দিন খালাদের বাড়ি গেলাম কলেজের পুরো বন্ধটা ওখানে কাটালাম। এলাকাটা খুব ভালো লাগে গ্রামীণ পরিবেশ।
২ দিন পর বাসায় ফিরলাম কালকে রেজাল্ট দিবে যেদিনটার জন্য এত কষ্ট করছি।
রাতে ঘুম হলো না। কেন জানি ঘুম আসলো না চোখে।
সকালে রেডি হয়ে কলেজে গেলাম আজকে রেজাল্ট দিবে
সাথে আম্মুকে নিয়ে আসচ্ছি
কারন আম্মু আমার জন্য এ কয়টা দিন অনকে কষ্ট কষ্ট করছে
আমি যতখন রাত জেগে পরতাম আম্মু ও জেগে থাকতো।
হঠাৎ করে আম্মু বল্লো
কিরে ওই মেয়েটা রিয়া না
গল্প - পুরোনো প্রাপ্তি
পর্ব -০৩ / শেষ পর্ব
লেখাঃ Raihan Bin Ak
হঠাৎ করে আম্মু বল্লো
কিরে ওই মেয়েটা রিয়া না
আমি - হে! তো কি হইছে..??
আম্মু - কি হইছে মানে এভাবে কথা বলতেছস কেনো
আমি - এমনেই
আম্মু - ডাক দে ওরে
আমি - আমি পারবো না, তুমি ডাক দেও
আম্মু - ঠিক আছে।
আম্মু - রিয়া এই রিয়া.. এদিকে আসো মা
আমি - মা কওয়া লাগবো..??
আম্মু - তুই চুপ কর
তখন রিয়া কাছে এসে
রিয়া - আসসালামু আলাইকুম আন্টি, কেমন আছেন
আম্মু - অলাইকুম আসসালাম। ভালো মা, তুমি কেমন আছো
রিয়া - এইতো আন্টি
আম্মু - পরিক্ষা কেমন হয়েছে.?
রিয়া - ভালো
আম্মু - বাসার সাবাই ভালো আছে
রিয়া - হে সবাই ভালো আছে। আন্টি রেজাল্ট দেওয়ার সময় হয়ে গেছে..! যেতে হবে
আম্মু - হে যাও ওই তুই ও যা
আমি - বলা লাগবে না আমাকে আমি জানি
আম্মু - যা
আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম ক্লাস রুমে যেখানে রেজাল্ট দিবে।
অনেকখন ধরে বসে আছি স্যারের কোনো খবর নাই।
১০ মিনিট পর স্যার আসলো। এক হাতে রেজাল্ট সিট আরেক হাত তার চর্বিযুক্ত পেট হাতাতে হাতাতে।
স্যার একে একে সবার রেজাল্ট দিতে শুরু করলো...
ফলাফল দিতে দিতে ৩ জন বাকি আছে আর তাদের মধ্যে আমি আর রিয়া আছি।
রিয়া আমার দিকে বার বার তাকাচ্ছে। আমি ওর দিখে ফোকাস দিচ্ছি না.. আমার সব দৃষ্টি ফলাফলের দিকে।
আমার হার্টবিট প্রচন্ড বেড়ে গেছে
আমি রীতিমত ঘামছি
এমন টেনশনে কখনো পরি নাই
আবির রোল - ২৭ তয় হয়েছো
রিয়া রোল - ১৯ ২য় হয়েছো
আদি রোল ২০ ১ম হয়েছো
তখন আদি নামটা শুনার সাথে সাথে চোখের পানি চলে আসলো.. চোখ বেয়ে যেনো সব পানি বেড় হয়ে যাবে।
ক্লাসের সবাই+ স্যার সহ থ হয়ে গেছে।
কেউ বিশ্বাসই করতেছেনা ১ম আমি হয়েছি
আমি যেনো এক ঘরে আছি। কোনো এক স্বপ্ন।
যেনো সব কিছু থেমে গেছে।
অনেকে এসে শুভেচ্ছা জানালো।
আমার এই লোক দেখানোর শুভেচ্ছা দরকার নেই । আমার এখন রিয়াকে দরকার
আমি রিয়া কে খুজতে থাকলাম ও কি ক্লাস এ নাই নাকি।
ওরে এখন লাগবে আমার । দৌড়ে ক্লাস থেকে বেড় হলাম.. অনেক খুজলাম কোথাও নাই। ও কি চলে গেলো নাকি
তারপর আম্মুর কাছে গেলাম
আম্মুকে কিছু বল্লাম না চুপ করে জরিয়ে ধরে কাদঁদে লাগলাম
আম্মু - কিরে বোকা কাদিঁস কেনো, ফেল করেসিছ
আমি - চুপ
আম্মু - এ বল না বাবা এত কষ্ট করলি রেজাল্ট কি
আমি - চুপ
আম্মু - কি হছে বল না এভাবে চুপ করে কাদিঁস কেন
আমি - তোমার পড়াশুনা খারাব করা ছেলে আজ পুরো কলেজে ১ম হয়েছে
আম্মু - সত্যি
আমি - হে
আম্মু - আমি জানতাম তুই যে পড়েসিছ রেজাল্ট ভালো হবেই
আমি - হুম
আম্মু - হইছে এখন আর কাঁদতে হবে না
আমি - হে, তোমার হাতে ওটা কি
আম্মু - ও এটা ডাইরি
আমি - কিসের
আম্মু - জানি না রিয়া তারাহুরা করে দিয়ে বল্লো তকে দিতে
আমি - ও দেও তো
আম্মু - একটা রিকশা ডাক দে
আমি - হুম
বাসায় চলে আসলাম।
এখন বড্ড হালকা লাগতেছে
অদ্ভুত এক শান্তি।
এমন অনুভুতি কোনোদিন হয় নি।
কাল থেকে কলেজের সাবই ডেব ডেব করে তাকিয়ে থাকবে।
দুপুরের খাবার খেয়ে যখন ঘুমাতে যাবো তখন ডাইরির কথা মনে পড়লো।
ডাইরি টা হাতে নিয়ে ভাবতে লাগলাম খুলবো নাকি খুলবো না। রিয়া আমাকে আবার কিসের ডাইরি দিবে।
একটু ভয়ে ভয়ে ডাইরি টা খুল্লাম।
লেখা
প্রিয় আদি
কিছু দিন ধরে তোমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ছেলেদের সাথে কথা বলি. তোমাকে এটা বুঝানোর জন্য আমি তোমার লাইফে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
...
তোমার জ্বর এসেছে। খুব খারাব লাগতেছে তাই না। খুব ইচ্ছে করতেছে তোমাকে।
তোমার কপালটা ছুয়ে দিতে।
আজকে যখন তুমি দরজা বন্দ করে আমার মুখ চেপে ধরলে আমি সত্যি ভয় পেয়ে গেছিলাম কারন আমি জানি তুমি খুব রাগি।
রেগে গেলে তুমি কি করো কোনো খেয়াল রাখো না।
তখন খুব ইচ্ছে করতেছিলো বলতে। যে কপাল এ একটা ভালোবাসার পরস একে দিতে।
তুমি যখন ওই ছেলের কথা পর আমার গালে চর মারলে.. আমি ওইদিন রাতে খুব কেঁদেছি। কেমনে মারতে পারলে আমাকে, আমি রাতে আর ঘুমাতে পারি নাই।
তুমি কি ভেবেছো তুমি কই কি করো আমি কিছু জানি না
আমি রোজ তোমার আম্মুকে ফোন দিয়ে তোমার খোজ রাখি
তুমি কি ভেবেছো তুমি এত ভালো রেজাল্ট শুধু এই কয়দিন পড়ালেখা করে করেছো।
তুমাকে রিফাত যে সাজেশন টা দিয়েছিলো ওটা আমার দেওয়া। আমি কষ্ট করে সারা বছর লাগিয়ে সাজেশন বানিয়েছি।
আমি জানতাম তুমি পড়বে কিন্তু এই কয়দিনে এত বিষয় ভালো ভাবে পড়া সম্ভব নয়
তাই আমি সাজেশনটা বানিয়ে তুমাকে দিয়ে ছিলাম।
আমি একটা পরিক্ষা খারাব দিয়েছি ইচ্ছা করে। যাতে তুমি আমার থেকে ভালো রেজাল্ট করতে পারো
আমি জানি তুমি খুব ভালো রেজাল্ট করবা। তাই আগে থেকেই ভেবে রেখেছি তোমার নাম বল্লে ক্লাস থেকে বের হয়ে যাবো।
আমার এইসব কারার একটাই কারন। তোমার ভালো রেজাল্ট করা।
আমি তোমাকে ভালোবাসি। সেটা একটু না অনেকটুকু। তুমি ছারা আমার কোনো অস্থিত্ব থাকবে না।
তুমি জানো তোমার আমার রিলেশনটা কলেজের কেউ দেখতে পারে না। সবাই তোমাকে আর আমাকে অপমান করে।
আমি কলেজের ভালো ছাএ আর তুমি খারাব ছাএ।
তোমাকে অনেক বুজিয়েছি আদি একটু পড়ো। ভালো করে পড়ো না হলে রেজাল্ট খারাব হবে।
কিন্তু তুমি কখনো আমার কথা শুনো নাই।
এটা একদিন না বহুদিন বলেছি তোমাকে।
কিন্তু তুমি আমার কথায় একটু ও গুরুত্ব দেও নাই।
আমি কি করতাম বলো। আমার তোমার সাথে এমন করা ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না।
জানি অনেক ভাবে তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। নিজেও অনেক কষ্ট পেয়েছি।
বিকালে কলেজের পাশের পার্কে অপেক্ষা করবো..! নীল শারি পড়ে।
ইতি তোমার রিয়া।
ডাইরি পরে বরফের মত জমে যাই আমি।
এইসব ও নিজ ইচ্ছায় করলো আর আমি কেনো টের পেলাম না।
নিজেকে বড্ড বোকা লাগতেছে।
এত কাছে থেকেও বুজতে পারলাম না।
ডাইরিটা বিছানার নিচে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম
বিকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে নীল পান্জাবি টা পরে বের হলাম।
পার্কে এক কোনো বসে আছে রিয়া।
কিছু বল্লাম না চুপ করে ওর পাশে বসলাম
- আদি গালটা এদিকে করো
- কেনো
- করো
- ঠাসসসসসস
- এই মাইয়া মারলা কেন
- সরম করলো না
- কিসের সরম
- ওই দিন যে বল্লা ওইটা কি তর বিএফ নাকি
- ও
- ও কি
- তুমি কি আমাকে মারার জন্য ডেকছো
- হে
- গাল পাত আরেকটা মারবো
- নেও মারো
- নেও. উম্মাহ
- এটা কি ছিলো
- ভালোবাসা
- আগেরটা কি ছিলো
- অভিমান
- তা বলে এই পাবলিক প্লেসে
- হুম
- কি হুম
- অনেক কষ্ট দিছি তাই না
- হে অনেক অনেক.. অনেক কাদাইছো
- কি করলে মাফ করবা বলো
- পার্মানেন্ট ভাবে ব্রেকআপ করলে
- আরেক বার বল শুধু আদিরে আদা বানায়া চা বানিয়ে খেয়ে ফেলবো
- কি
- হে
কিছুখন নিরবতা কেউ কিছু বলছি না
রিয়া আমার আস্তে করে আমার হাতটা ধরে বল্লো
- এ বাবু সরি
- এই বাবু কে হে
- তুমি
- সরি...!!!
- কিসের সরি
- কষ্ট দিছি যে
- আচ্ছা ভালোবাসতে কি এমনই পারফেক্ট হওয়া লাগে।
- না.. কিন্তু নিজের সম্মান নিজের বজায় রাখা লাগে.. যাতে কেউ অসম্মান করতে না পারে...
- এত কষ্ট না দিলেও পারতা
- তো কি... তোমাকে তো চেন্ছ করতে পারছি
- হুম 😴😴
- যাই হোক আমি এখন অন্য মেয়েকে লাইক করা শুরু করছি
- কি...??
- এত কাছে থেকেও কানে শুনতে পাও না
- আমি কিন্তু কান্না করবে
- করো
- কি খারাব.. কাদাতে কষ্ট লাগে না
- আমার লাগে, তোমার লাগে না
- এইসব কি আমার জন্য করছি
- হে তুমার জন্য তো করছো
- কি..??
- এ যে তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমাকে ছারা থাকতে পারবা না। তাই এমন নাটক করলা।
- হুম
- যাই হোক এখন ওঠি নতুন বাবুনিটাকে সময় দিতে হবে
ওঠতেই রিয়া খব করে জরিয়ে ধরলো
আর বল্লো তুমি আমার আর কারো না
চুপ চাপ বসো সন্ধার হলে আমাকে বাসায় দিয়ে বাসায় যাবা
- ও আচ্ছা আমার কি তোমার চাকর মনে হয়
- না. জামাই মনে হয়।
- আমি কাউকে দিয়ে আসতে পারবো না
- এ ডং কালকেই তো ফোন দিয়ে বলবা। বাবু আসো দেখা করি
- না. ৪-৫ মাস দেখা না করে থাকতে পারছি. এখনো থাকতে পারবো
- এখনো অভিমান করে আছে
- হে আর এটা সারাজীবন থাকবে
- সাথে আমাকে রাখবে না
- তুমি ছাড়তে দিবা নাকি
- হে সেটাই।
- নীল শারীতে কিন্তু তোমাকে অনেক কিউট লাগতেছে
- তাই
- হে
তারপর পাগলিটার গাল টা টেনে দিলাম।
সব অভিমান ভুলে আমরা এখন একে অপরের।
ও আমাকে অনেক বুঝিয়ে ছিলো আদি একটু ভালো করে পড়ো।
আমি শুনিনি। কিন্তু ও এমন এক কান্ড করবে তা তো আর জানা ছিলো না
রিয়ার হাত ধরে পুরো বিকালটা কাটালাম
পরিবেশটা আজকে সেজেছে নতুন করে.. নীল আকাশ মেঘের ছুটা ছুটি..!!
ধমকা বাতাস..
সন্ধায় রিয়াকে বাসায় দিয়ে আসলাম
আর আমি হেটে হেটে বাসার দিকে রওনা দিলাম
বাসায় যেয়ে আম্মু কে বলতে হবে আমর উন্নীত সাধন কারি মেয়েটা রিয়া।
@সমপ্ত
বিশেয সূচনাঃ নতুন গল্প আগামীকাল।দেওয়া হবে,
@ অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে। পর্ব ১.২.৩ কষ্ট করে পড়ে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করার জন্য।
আপনার ছোট ছোট কমেন্ট.. আমাকে গল্প লিখতে আগ্রহ বাড়ায়।
#দেখা হবে খুব শীঘ্রই নতুন গল্প নিয়ে।
আল্লাহ হাফেজ ☺️